কেন আপনার আমদানি, রপ্তানি ও ইনডেন্টিং ব্যবসা করা উচিত?

দেখুন আমরা এমন এক সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি যেখানে প্রযুক্তি খুব রেপিডলি চেন্জ হচ্ছে। আগে যেখানে প্রযুক্তিগত পরিবর্তনগুলো হতো দশকের পর দশক সময় ধরে, এখন সেখানে ইয়ার অন ইয়ার চেন্জ হচ্ছে। আমার কাছে মনে হচ্ছে প্রতি ছয়মাস পর পর চেন্জ হচ্ছে। সময়টা এমন যাচ্ছে আপনি একটা পরিবর্তনের সাথে এডাপ্ট করতে না করতেই আরেকটা পরিবর্তন সামনে চলে আসছে। আর এই পরিবর্তনের ফলে অনেক পেশাজীবিরা দিন দিন ঝুকিতে পড়ে যাচ্ছেন।

 

কিছু উদাহরণ দিই, তাহলে আপনাদের এ ব্যাপারগুলো বুঝতে হয়তো আরো সুবিধা হবে।

আপনারা খুব ভালো ভাবেই জানেন, প্রযুক্তির এ যুগে রোবট এসে অনেক শ্রমজীবিদের কে রিপ্লেস করে ফেলছে। যার উৎকৃষ্ট উদাহরণ আমাজান ও আলীবাবা’র ওয়ারহাউস। অনেক অ্যাপ আছে যেগুলো ডিজাইনার ও আর্কিটেক্টদের জায়গা সংকুচিত করে দিচ্ছে। আমেরিকাতে কিছু অ্যাপ আইনজীবিদের মত করেই ছোট খাট আইনি পরামর্শ দিচ্ছে। টেসলা চালক বিহীন গাড়ি অন ট্রায়ালে রেখেছে। যা ড্রাইভারদের পেশাকে ঝুকির মুখে ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ আই এবং জিপিটি এগুলোর কথা নাই বা বললাম। 

 

ডিজিটাল ব্যাংকিং বা ক্যাশলেস সোসাইটি ব্যাংকারদের চাকরি ঝুকিতে ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে…

 

এখন আপনার প্রশ্ন আসতে পারে এই মুহূর্তে আমাদের করনীয় কি? টোটাল সারকামসটেন্সেস দেখে আমার কাছে যেটা মনে হচ্ছে… দুটো জিনিস করা উচিত। প্রথমত টেকনোলজি নিয়ে বিজনেস করেন। যদি টেকনলজি সম্পর্কে আপনার জ্ঞান এবং ইন্টারেস্ট থাকে। আর দ্বিতীয়ত, আপনার নিজের এখন যে ব্যবসা আছে সেটাকে টেকনোলজির সাথে এডাপ্ট করান, ইন্টিগ্রেট করান। যেটা আপনাকে আগামী দিনে টিকে থাকতে সহযোগিতা করবে। 

 

আমি দীর্ঘদিন থেকেই আমদানি, রপ্তানি, ইনডেন্টিং সেক্টরে কাজ করি। আমি এমন কিছু মানুষকে চিনি যারা নিজেরা কিন্তু টেকনিক্যাল পারসন না। বাট তারা টেকনলোজিকাল প্রোডাক্ট নিয়ে ব্যবসা করে আজকে শত কোটি টাকার ব্যবসা দাড় করিয়েছেন।

 

প্রযুক্তির এযুগে এসে এখন সময়টা এমন যাচ্ছে একটা নতুন প্রযুক্তি এসে অনেক গুলো প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের ব্যবসা বন্ধ করে দিচ্ছে। কিন্তু আপনি যদি আমদানি/রপ্তানি ব্যবসা জানেন, সেক্ষত্রে আপনার সরাসরি এ প্রবলেম গুলো ফেস করতে হবে না। হ্যা আপনার হয়তো ব্যবসার দিক পরিবর্ততন হতে পারে কিন্তু ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে না।

 

আরেকটা উদাহরণ দিই, তাহলে ব্যাপারটা আপনাদের বুঝতে আরো সহজ হয়ে যাবে। একটা সময় এদেশে প্রচুর পরিমাণে ঘড়ি, ক্যালকুলেটর, টর্চ লাইট, ক্যামেরা, ফটোফিল্ম ইত্যাদি জিনিসপত্র আমদানি হতো। কিন্তু মোবাইল আসার পরে এই সবগুলো পণ্যকে ধীরে ধীরে রিপ্লেস করে ফেলছে। এখন কথা হলো যারা আগে এইসব আমদানি করতো, তারা কি ব্যবসা বন্ধ করে ফেলছে? উত্তর হলো না! তারা ব্যবসা বন্ধ করে নাই, তারা পণ্যের পরিবর্তন করেছে মাত্র। যখনই এসব পণ্য কাস্টমার’রা কেনা বন্ধ করে দিয়েছে, তখনই তারা যেসব পণ্যের প্রতি কাস্টমারদের আগ্রহ বেড়েছে, ঐসব পণ্য আমদানির দিকে গেছে। কারণ আমদানিকারকরা নিজেরা পণ্য উৎপাদন করে না। তারা সেইসব পণ্যই আমদানি করে যেগুলো কাস্টমারদের চাহিদার টপ লিস্টে থাকে। তাই রপ্তানিকারকদেরও কাস্টমারদের চাহিদা মাথায় রেখে পণ্য উৎপাদনের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। নতুবা ভুল প্রোডাক্ট বা সময় অনুপোযোগী প্রোডাক্ট ধ্বংসের কারণ হয়ে দাড়াবে। ইনডেন্টর’রা এদিক থেকে সেইফ। কারণ তারা সবসময় যে প্রোডাক্ট চলবে, ঐ প্রোডাক্ট ই বিক্রি করবে, বিনিময়ে কমিশন নিবে। তাই এই ব্যবসাগুলো সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো প্রযুক্তির উন্নয়নে হাজারো পণ্যের ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলেও আপনার ভয় নেই। কারণ আপনি সময়ের সাথে সাথে পণ্য পরিবর্তন করে ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখতে পারবেন। কিন্তু ব্যবসা বন্ধ করতে হবে না।

 

সবচেয়ে বড় কথা হলো পৃথিবী যতদিন আছে বিশেষ করে মানুষ যতদিন থাকবে আমদানি, রপ্তানি, ইনডেন্টিং ব্যবসাও ততদিন থাকবে। শুধুমাত্র ফুড ইন্ডাস্ট্রির কথাই চিন্তা করেন। এর সত্য তা আপনাকে বলে দিতে হবে না। পৃথিবী যত আধুনিক আর প্রযুক্তি নির্ভরই হোক না কেন, মানুষ যতদিন পৃথিবীতে থাকবে, ফুড ইন্ডাস্ট্রি ততদিনই ব্যবসা করে যাবে।

 

রিসেন্টলি একটা আর্টিকেলে দেখলাম মার্কা জাকারবার্গ, বিল গেটস, ইলন মাস্ক এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিতে প্রচুর পরিমাণে ইনভেস্ট করতেছে। দিন শেষে এই সত্যটা সবাই অনুধাবন করছে, টিকে থাকতে হলে খাবার এর কোন বিকল্প নাই। 

 

দেখুন আল্লাহ তায়াল পৃথিবীটাকে এমন ভাবে ডিজাইন করেছেন যেখানে পৃথিবীর কোন দেশই 100% স্বয়ং সম্পূর্ণ না। কোন দেশে প্রচুর পরিমানে খনিজ সম্পদ আছে, আবার কোন দেশে প্রাকৃতিক সম্পদ, কোন দেশ আবার প্রচুর পরিমানে শস্য/ফসল উৎপাদন করে। সো কোন দেশই যেহেতু শতভাগ স্বয়ং সম্পূর্ণ না, তাই একটা দেশ আরেকটা দেশের উপর নির্ভারশীল। আর এই নির্ভারশীলতার কারণেই এক দেশের পণ্য অন্য দেশে যাবেই, এটাই স্বাভাবিক। আর এই প্রক্রিয়াটাই মূলত সম্পন্ন করবে আমদানি, রপ্তানি ও ইনডেন্টিং ব্যবসা। তাই সন্দেহকে পাশ কেটে বলতেই পারছি আমদানি, রপ্তানি ও ইনডেন্টিং ব্যবসা কখনই বন্ধ হবে না। এখানে প্রোডাক্ট চেন্জ হতে পারে বাট ব্যবসা চেন্জ হবে না। তাই চোখ বন্ধ করে বলে দেওয়া যায়, আমদানি, রপ্তানি ও ইনডেন্টিং একটা স্থায়ী এবং টেকসই ব্যবসা।

 

সবশেষে একটা কথাই বলবো আশাকরি আমদানি নির্ভর মার্কেটের একটা দেশে বসে আপনাকে খুবকরে বুঝাতে হবে না কেন আপনার এই ব্যবসাগুলো করা উচিত। কারণ মার্কেটে চোখ রাখলে আপনি প্রতিনিয়তই সেটা অনুধাবন করবেন। এ সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে আমাদের সাইটের ফ্রী কোর্সটি উপভোগ করতে পারেন শুধুমাত্র আপনার ইমেইলটি ভেরিফাই করার মাধ্যমেই।

2024 Learners Lamp

গোপনীয়তা নীতি ব্যবহারের শর্তাবলী