আমদানি, রপ্তানি ও ইনডেন্টিং ব্যবসায় ব্যবহৃত হয়; এমন কিছু গুরুত্ব পূর্ণ টার্মোনলজি।

আসসালামুয়ালাইকুম, আজকের ব্লগে আপনাদের স্বাগতম। আজকে আমরা এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ টার্মোনলজি নিয়ে কথা বলবো, যা আমদানি, রপ্তানি ও ইনডেন্টিং ব্যবসায় নিয়মিত ব্যবহৃত হয়। এবং একজন আমদানি বা রপ্তানিকারক হিসেবে বা ইনডেন্টর হিসেবে যে ব্যাপারগুলো আমাদের সকলের ই জানা উচিত।

 

নিয়মিত ব্যবহৃত টার্মোনলজি সমূহঃ

1.      অন্ট্রাপো ট্রেডঃ যার ফুল ফর্ম ইন্টার পোর্ট ট্রেড, এই ব্যবসা টা এমন, কোন একটা পণ্য রপ্তানি করার উদ্দেশ্যে আপনি আমদানি করতে পারবেন। যেখানে পণ্যের গুনগত, পরিমানগত বা আকৃতিগত কোন ধরনের পরিবর্তন না করে তার সাথে নূন্যতম ৫% যোগ করে তারপর রপ্তানি করতে হবে। এক্ষেত্রে শর্ত হলো, যে পোর্ট দিয়ে আমদানি করেছেন ঠিক সেই পোর্ট দিয়ে রপ্তানি করতে হবে। যদি কোন কারণে পোর্ট পরিবর্তন করতে হয়; সেক্ষেত্রে অবশ্যই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি লাগবে। আরো বিস্তারিত জানতে আমাদের ফ্রি কোর্সটি দেখতে পারেন।

 

2.      মার্চেন্টিং ট্রেডঃ মার্চেন্টিং ট্রেড হলো সেই বাণিজ্য যেখানে আপনি দ্বিতীয় কোন দেশ থেকে কোন একটা পণ্য ক্রয় করে তৃতীয় কোন দেশে বিক্রি করবেন।

 

3.      বার্টার ট্রেডঃ  এই বাণিজ্যটি হলো পণ্যের বিনিময়ে পণ্য। যেখানে কোন ধরনের কারেন্সী লেনদেন না করে একটা পণ্যের বিনিময়ে আরেক টি পণ্য লেনদেন করবেন। 

 

4.      পুনঃরপ্তানিঃ স্থানীয়ভাবে কোন পণ্যের পুনঃপ্রক্রিয়া করে ঐ পণ্যের আকৃতি/গুনগত বা পরিমানগত পরিবর্তন করে তার সাথে নূন্যতম ১০% যোগ করে রপ্তানি করাকে পুনঃরপ্তানি বলা হয়। 

 

5.      আমদানি মূল্যঃ কোন একটা পণ্য আমদানি করার ক্ষেত্রে সি এফ আর বা সি পি টি মূল্যকেই আমদানি মূল্য হিসেবে কাউন্ট করা হয়। 

 

6.      ইনকোটার্মস; পেমেন্ট ও শিপিং টার্মসঃ  ইনকোটার্মস, যার ফুল ফর্ম ইন্টারন্যাশনাল কর্মাশিয়াল টার্মস। যেখানে আই সি সি কর্তৃক আমদানি ও রপ্তানির ক্ষেত্রে পেমেন্ট ও শিপিং টার্মস গুলো কে বুঝানো হয়। পেমেন্ট ও শিপিং টার্মস নিয়ে আমরা আমাদের আলাদা আলাদা ব্লগে কথা বলেছি। সেই ব্লগগুলো দেখলে বিস্তারিত জানতে পারবেন। এছাড়াও, আরো বিস্তারিত জানতে আমাদের ফ্রি কোর্সটি দেখতে পারেন। 

 

7.      এইচ এস কোডঃ  যার ফুল ফর্ম, দ্যা হারমোনাইজড কমোডিটি ডেসক্রিপশন এন্ড কোডিং সিস্টেম। এটা ডব্লিও সি ও কর্তৃক প্রত্যেকটা পণ্যের জন্য একটা নির্দিষ্ট কোড। যার উপর ভিত্তিকরে কাস্টমস আপনার কাছ থেকে শুল্ক আদায় করবে। এ ব্যাপারে আরো বিস্তারিত জানতে আমাদের ফ্রি কোর্সটি দেখতে পারেন।  

 

8.      এডহক শিল্প আই আর সিঃ এডহক একটি ল্যাটিন শব্দ, যার অর্থ ভারপ্রাপ্ত। যে ব্যাপারগুলোতে কিছু নির্দিষ্ট সময় বা কাজের জন্য ব্যবহার করা হয়। সেসব ক্ষেত্রে এডহক শব্দটি ব্যবহার করা হয়। যেমন, এডহক কমিটি বা এডহক আই আর সি।

 

9.      সেলস বা বায়িং কন্ট্রাক্টঃ বায়ার এবং সেলারের মাঝে যে কন্ট্রাক্ট টা হয় অর্থাৎ যে কন্ট্রাক্টের উপর ভিত্তি করে বাণিজ্য সম্পাদন হয় তাকে সেলস বা বায়িং কন্ট্রাক্ট বলে।

 

10. পি আইঃ পি আই যার ফুল ফর্ম হলো প্রফোর্মা ইনভয়েস। অর্থাৎ যে ডকুমেন্টস এর উপর ভিত্তি করে বায়ার এলসি ওপেন করে থাকেন। এ ব্যাপারে আরো বিস্তারিত জানতে আমাদের ফ্রি কোর্সটি দেখতে পারেন।  

 

11. সি পি ওঃ যার ফুল ফর্ম হলো কর্পোরেট পারসেজ অর্ডার। বড় বড় অর্ডারের ক্ষেত্রে এই ডকুমেন্টসটি ব্যবহার করা হয়। যেখানে এ টু জেড কাজের প্রক্রিয়াটি উল্লেখ করা থাকে।

 

12. এলসিঃ আপনারা খুব ভালো ভাবেই জানেন, যার ফুল ফর্ম হলো লেটার অব ক্রেডিট। এলসি সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে আমাদের ফ্রি কোর্সটি দেখতে পারেন।  

 

13. আই পিঃ আই পি হলো ইমপোর্ট পারমিট। যেটা বিশেষ বিশেষ প্রোডাক্টের ক্ষেত্রে পোষক কর্তৃপক্ষ থেকে এলসি ওপেন করার আগে নিতে হয়। 

 

14. সি পিঃ সি পি যার অর্থ হলো ক্লিয়ারেন্স পারমিট। এটাও বিশেষ বিশেষ প্রোডাক্টের ক্ষেত্রে কাস্টমস থেকে প্রোডাক্ট রিলিজ করার আগে সিসিআইএন্ডই থেকে নিতে হয়। 

 

15. সার্ভেয়ার প্রতিষ্ঠানঃ যে কোম্পানিগুলো দ্বারা আপনার আমদানি বা রপ্তানি করা পণ্যটি পরিমান গুন এবং মানের ক্ষেত্রে তদন্ত করা হয়। সেসব কোম্পানিকে সার্ভেয়ার কোম্পানি বলা হয়। এধরনের কোম্পানির ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক কিছু মানদন্ড আছে। সেগুলো পূরণ করতে হয়। 

  

16. সি এন্ড এফ এজেন্টঃ যার ফুল ফর্ম হলো ক্লিয়ারিং এবং ফরোয়ার্ডিং এজেন্ট। এই কোম্পানিগুলো আমাদের দেশের কাস্টমস থেকে অনুমোদন প্রাপ্ত কোম্পানি। যারা আপনার আমদানি বা রপ্তানি করা পণ্য কাস্টমস থেকে ক্লিয়ার বা ফরোয়ার্ড করতে সাহায্য করে।

 

17. ফ্রেইট ফরোয়ার্ডারঃ এই কোম্পানিগুলো বিশেষ করে আপনার রপ্তানি করা পণ্যের জন্য কার্গো স্পেস নিতে সহায়তা করে।

 

18. পোষক কর্তৃপক্ষঃ এরা হলো সেইসব প্রতিষ্ঠান বা প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ, যারা বিশেষ শ্রেণী বা খাতের নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

 

19. শিল্প ভোক্তাঃ শিল্প ভোক্ত বলতে সাধারণত শিল্প প্রতিষ্ঠানকেই বোঝানো হয়। যারা শতভাগ দেশী শিল্প প্রতিষ্ঠান বা যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বিদেশী বিনিয়োগকারী।  

 

20. সরকারি আমদানিকারকঃ সরকারী প্রতিষ্ঠান বা সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, কর্পোরেশান বা পাবলিক স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়।

 

21. এস আর ওঃ স্টেচুটরি রেগুলেটরি অর্ডার যার সংক্ষিপ্ত রুপ এস আর ও এর বাংলা হলো সংবিধিবদ্ধ নিয়ন্ত্রণ আদেশ। আমদানি রপ্তানির উপর বিশেষ বিশেষ সময় বিশেষ কিছু নিয়ন্ত্রণ আদেশ করা হয়। এগুলোকেই এস আর ও বলা হয়।  

 

এছাড়াও আরো বেশ কিছু টার্মোনলজি আছে, যে ব্যাপারগুলো আরো বিস্তারিত জানতে আমাদের ফ্রি কোর্সটি দেখতে পারেন।   

আজকের জন্য আল্লাহ হাফেজ…। 

2024 Learners Lamp

গোপনীয়তা নীতি ব্যবহারের শর্তাবলী